মন খেরোর খাতা
মন খেরোর খাতাকে কয়েক দিন ধরে লিখছিলাম “মন খারাপের খাতা”।লেখার সংগত কারণ ছিল।কিছুদিন ধরেই আকাশে-মাটিতে যা উল্লাস দেখছিলাম।ফসল কাটা আর ফসল তোলার গান শুনছিলাম অথচ এখনও বরষা বিদায় নেয়নি।এর মধ্যে কতো বিশেষ(অ)জ্ঞ দের একতারা-দোতারার মতো করেই তিন ফসল-চার ফসলের মতামত আর আলোচনা শুনে ভুল করে ঠিক আলোয় চোনা ফেলে দিচ্ছিলাম।এর মধ্যে কে যেন মনের শততন্ত্রী বীণায় ঝংকার দিয়ে গেয়ে উঠলেন-“অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো/সেই তো তোমার আলো/সকল দ্বন্দ্ব বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো/সেই তো তোমার ভালো!”
আমার চেতনায় বারে বারে ঘা দেন রবীন্দ্রনাথ।আমার গোপন ঘরে উঁকি দেন ভবঘুরে হো-চি-মিন।আমার বিভ্রান্তি কালে আলো জ্বালে “দ্বন্দ্ব্মূলক বস্তুবাদ”।আমার প্রেমে ফিরে ফিরে আসেন কবি মাওৎ-সে-তুং।আমার কলমের নিবে ধার দেন বারটোল্ট ব্রেক্ষট।আমার অক্ষম কন্ঠে ভর করেন জর্জ বিশ্বাস আর হেমাংগ বিশ্বাস,সুচিত্রা মিত্র আর সলিল চৌধুরি।আমার দিন যাপনে সংগে থাকেন লালন ফকির আর মির্জা গালিব।আমি মুক্তি খুঁজিনি উপনিষদে,যদিও সুপ্তি থেকে জেগে উঠি।‘বোকা বুড়োর গল্প’ আমাকে আশা জাগায়।তথাগত আমাকে ক্ষমাশীল হোতে সাহায্য করেন।আমাকে খেপিয়ে তোলেন চৈতন্য।আমাকে জাগিয়ে রাখেন চারণকবি মুকুন্দদাস।আমাকে সুর শোনান চাইকভস্কি, রবিশঙ্কর।আমার চিত্তে নৃ্ত্য করেন উদয়শঙ্কর।আমার শিক্ষায় লোকায়ত সুরে জাগে “মৈমনসিংহ গীতিকা”।
সম্প্রতি আকাশবাণী দুই-বাংলার সুর আর সংস্কৃতিকে মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ করার যে উদ্যোগ নিয়ে “মৈত্রী চ্যানেল” এর সম্প্রচার শুরু করার সংগে সংগেই বিপুল সাড়া জেগেছে তা আশা জাগাচ্ছে।সেই কোন শৈশব থেকে খেলার পুতুলকে পাশে নিয়ে শোবার মতো করে রেডিয়ো আমাদের সংগী ছিল।তার প্রচারিত সংবাদ,নাটক,গান আর খেলার ধারা-বিবরণী আমরা চোখ বুজে কান খুলে দেখতাম।নিশুত রাতে পাশ্চাত্য সংগীত,সিম্ফনি আর ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের “লাইভ ব্রডকাস্ট” আমাকে ঘুমোতে দিত না।আমি জেগে থাকতাম সারা রাত।আমি জেগে আছি আজও।
আকাশবাণীতে নাটক লিখছি বহুদিন।এবার আমার ভাই-বন্ধু আশিস গিরি আর সুব্রত মজুমদার আমার কাঁধে আরও গুরু দায়িত্ব চাপিয়েছে।কতোকাল আগে পড়া গীতিকাগুলি নিয়ে এবার বেতার নাট্যরূপ দিতে আমার ডাক পড়েছে।আমিও সানন্দে রাজি হয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছি।আর এ ব্যাপারে একটি আপ্তবাক্য আমাকে খুব সাহস জুগিয়েছে।“জিধর বুজুর্গ পাও নেহি রাখ সকতে,মূরখ্ ঝট সে পাও রাখ দেতে!” বাংলা করলে এই রকম দাঁড়ায় – “যেখানে বিজ্ঞরা পা ফেলতে সাহস পান না,সেখানে মূর্খ মুহুর্তে পা ফ্যালে!”
এই যে সব লিখলাম এ সবই “ধান ভাণতে শিবের গীত”।কিছুদিন ধরেই মনের কথা গুলো মনের মধ্যে চেপে না রেখে,চায়ের কাপে তুফান না তুলে ফেসবুকে লিখছিলাম।সে সব পড়ার লোকজনও দেখলাম আছেন।তারা পড়েন,পছন্দ করেন আর কেউ কেউ মতামত দেন।আর আমার শান্তিনিকেতনের সাংবাদিক বন্ধুরা বিশেষ করে স্নেহাশিস আর মহেন্দ্র ওগুলোকে ব্লগের বাক্সে ভরার পরামর্শ দিল।আমিও জুন মাস থেকে ব্লগ শুরু করলাম।এই চার মাসে আমার ব্লগ ভিজিট করেছেন হাজারের বেশি মানুষ।আমি ভাবতেও পারিনি।আশার কথা আমার লেখার পাঠিকা-পাঠক যেমন ভুবন ডাঙাতে আছে,পারুল ডাঙাতেও আছে।আবার এই দুই ডাঙা ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশের নানান প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন।সর্বশেষ পরিসংখ্যান এই রকম –
India
633
United States
239
France
74
Bangladesh
27
Australia
2
United Kingdom
2
United Arab Emirates
1
Chile
1
China
1
Germany
1
আচ্ছা এরা যে সবাই ভারতীয় নয় সে তো বোঝাই যায় কিন্তু বাংগালিও নয়?তাও নয় সবাই।তবে বাংলাটা পড়তে পারেন তারা।অনেকে আবার নিজের নিজের ভাষায় অনুবাদ করে পড়ছেন।তা হোলে আমার কী করা উচিত?আরও লিখে যাওয়া?যেমন করে আমার পেশা আমার নেশা নাট্য কলা।
মন খেরোর খাতাকে কয়েক দিন ধরে লিখছিলাম “মন খারাপের খাতা”।লেখার সংগত কারণ ছিল।কিছুদিন ধরেই আকাশে-মাটিতে যা উল্লাস দেখছিলাম।ফসল কাটা আর ফসল তোলার গান শুনছিলাম অথচ এখনও বরষা বিদায় নেয়নি।এর মধ্যে কতো বিশেষ(অ)জ্ঞ দের একতারা-দোতারার মতো করেই তিন ফসল-চার ফসলের মতামত আর আলোচনা শুনে ভুল করে ঠিক আলোয় চোনা ফেলে দিচ্ছিলাম।এর মধ্যে কে যেন মনের শততন্ত্রী বীণায় ঝংকার দিয়ে গেয়ে উঠলেন-“অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো/সেই তো তোমার আলো/সকল দ্বন্দ্ব বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো/সেই তো তোমার ভালো!”
আমার চেতনায় বারে বারে ঘা দেন রবীন্দ্রনাথ।আমার গোপন ঘরে উঁকি দেন ভবঘুরে হো-চি-মিন।আমার বিভ্রান্তি কালে আলো জ্বালে “দ্বন্দ্ব্মূলক বস্তুবাদ”।আমার প্রেমে ফিরে ফিরে আসেন কবি মাওৎ-সে-তুং।আমার কলমের নিবে ধার দেন বারটোল্ট ব্রেক্ষট।আমার অক্ষম কন্ঠে ভর করেন জর্জ বিশ্বাস আর হেমাংগ বিশ্বাস,সুচিত্রা মিত্র আর সলিল চৌধুরি।আমার দিন যাপনে সংগে থাকেন লালন ফকির আর মির্জা গালিব।আমি মুক্তি খুঁজিনি উপনিষদে,যদিও সুপ্তি থেকে জেগে উঠি।‘বোকা বুড়োর গল্প’ আমাকে আশা জাগায়।তথাগত আমাকে ক্ষমাশীল হোতে সাহায্য করেন।আমাকে খেপিয়ে তোলেন চৈতন্য।আমাকে জাগিয়ে রাখেন চারণকবি মুকুন্দদাস।আমাকে সুর শোনান চাইকভস্কি, রবিশঙ্কর।আমার চিত্তে নৃ্ত্য করেন উদয়শঙ্কর।আমার শিক্ষায় লোকায়ত সুরে জাগে “মৈমনসিংহ গীতিকা”।
সম্প্রতি আকাশবাণী দুই-বাংলার সুর আর সংস্কৃতিকে মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ করার যে উদ্যোগ নিয়ে “মৈত্রী চ্যানেল” এর সম্প্রচার শুরু করার সংগে সংগেই বিপুল সাড়া জেগেছে তা আশা জাগাচ্ছে।সেই কোন শৈশব থেকে খেলার পুতুলকে পাশে নিয়ে শোবার মতো করে রেডিয়ো আমাদের সংগী ছিল।তার প্রচারিত সংবাদ,নাটক,গান আর খেলার ধারা-বিবরণী আমরা চোখ বুজে কান খুলে দেখতাম।নিশুত রাতে পাশ্চাত্য সংগীত,সিম্ফনি আর ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের “লাইভ ব্রডকাস্ট” আমাকে ঘুমোতে দিত না।আমি জেগে থাকতাম সারা রাত।আমি জেগে আছি আজও।
আকাশবাণীতে নাটক লিখছি বহুদিন।এবার আমার ভাই-বন্ধু আশিস গিরি আর সুব্রত মজুমদার আমার কাঁধে আরও গুরু দায়িত্ব চাপিয়েছে।কতোকাল আগে পড়া গীতিকাগুলি নিয়ে এবার বেতার নাট্যরূপ দিতে আমার ডাক পড়েছে।আমিও সানন্দে রাজি হয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছি।আর এ ব্যাপারে একটি আপ্তবাক্য আমাকে খুব সাহস জুগিয়েছে।“জিধর বুজুর্গ পাও নেহি রাখ সকতে,মূরখ্ ঝট সে পাও রাখ দেতে!” বাংলা করলে এই রকম দাঁড়ায় – “যেখানে বিজ্ঞরা পা ফেলতে সাহস পান না,সেখানে মূর্খ মুহুর্তে পা ফ্যালে!”
এই যে সব লিখলাম এ সবই “ধান ভাণতে শিবের গীত”।কিছুদিন ধরেই মনের কথা গুলো মনের মধ্যে চেপে না রেখে,চায়ের কাপে তুফান না তুলে ফেসবুকে লিখছিলাম।সে সব পড়ার লোকজনও দেখলাম আছেন।তারা পড়েন,পছন্দ করেন আর কেউ কেউ মতামত দেন।আর আমার শান্তিনিকেতনের সাংবাদিক বন্ধুরা বিশেষ করে স্নেহাশিস আর মহেন্দ্র ওগুলোকে ব্লগের বাক্সে ভরার পরামর্শ দিল।আমিও জুন মাস থেকে ব্লগ শুরু করলাম।এই চার মাসে আমার ব্লগ ভিজিট করেছেন হাজারের বেশি মানুষ।আমি ভাবতেও পারিনি।আশার কথা আমার লেখার পাঠিকা-পাঠক যেমন ভুবন ডাঙাতে আছে,পারুল ডাঙাতেও আছে।আবার এই দুই ডাঙা ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশের নানান প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন।সর্বশেষ পরিসংখ্যান এই রকম –
India
633
United States
239
France
74
Bangladesh
27
Australia
2
United Kingdom
2
United Arab Emirates
1
Chile
1
China
1
Germany
1
আচ্ছা এরা যে সবাই ভারতীয় নয় সে তো বোঝাই যায় কিন্তু বাংগালিও নয়?তাও নয় সবাই।তবে বাংলাটা পড়তে পারেন তারা।অনেকে আবার নিজের নিজের ভাষায় অনুবাদ করে পড়ছেন।তা হোলে আমার কী করা উচিত?আরও লিখে যাওয়া?যেমন করে আমার পেশা আমার নেশা নাট্য কলা।