অন্তরঙ্গ নাট্য১
ছোটবেলায় দেশঘরে থিয়েটার দেখেছি, করেছি মাঠে অস্থায়ী স্টেজে।পরে জেনেছিলাম ওকেই বলে প্রসেনিয়ম স্টেজ।নাটক নিয়ে পড়তে এসে বুঝলাম ওটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো।তখন আকাদেমি, রবীন্দ্রসদন, মুক্তাঙ্গন, রঙ্গনা, রঙমহল, মিনার্ভা, বিশ্বরূপা এগুলোই ছিল থিয়েটার করার স্টেজ।এর মধ্যে আকাদেমিই ছিল সবার প্রাণকেন্দ্র।সে বহুরূপীই হোক কি পি এল টি।নান্দীকার হোক কি থিয়েটার ওয়র্কশপ।থিয়েটার কমিউন হোক কি চার্বাক।বাকি অনেকের যাদের নাম নিলাম না তারা কালেভদ্রে সুযোগ পেতেন বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার মতন।অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এর নাটক তখন সকালে হয়।
তখনও বাংলা নাট্যচর্চায় নামে তালপুকুর ঘটি ডোবে না অবস্থা হয়নি পেশাদার থিয়েটারের।জমিদারী যেতে চলেছে এটা বোঝা গেলেও ঠাটবাট বজায় রাখার মরিয়া চেষ্টাটা আছে।তার সংগে অনুপ্রবেশ ঘটল প্রাপ্তবয়স্ক নামের অশ্লীল অনাটক।বারবধূ প্রতাপ মঞ্চে রমরমিয়ে চলছে শুধু "A" লেখার টানে।আমি পরে স্ক্রিপ্টটা পড়েছি মন দিয়ে।কোথাও অশ্লীল ছিল না।
এর মধ্যেই চুপিসাড়ে এসে পড়ল বাদল সরকারের থার্ড থিয়েটার।নাটক দেখতে গিয়ে মারা পড়ল প্রবীর দত্ত কার্জন পার্কে।এসে গেল বামফ্রন্ট।বেঁচে গেল গ্রুপ থিয়েটার।বাংলা নাটক অক্সিজেন নিল বার্টোল্ট ব্রেক্ষ্টে।
এবার বাংলা থিয়েটার একদিকে হাতিবাগানের বাণিজ্যিক থিয়েটার, ক্ষয়িষ্ণু পেশাদার থিয়েটার, গণনাট্য, গ্রুপ থিয়েটার আর অন্য ধারার থার্ড থিয়েটার।
বাদল সরকার এই প্রসেনিয়ম কনসেপ্ট ভাঙলেন তা কিন্তু নয়।চারের দশক থেকেই গণনাট্য পথে নাটক করছে।সামান্য কিছু উপকরণ, বাদ্যযন্ত্র গলায় ঝোলানো।পুলিশ তাড়া করলেই পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে হয়।অভিনয় আর নাট্যবিষয় এই ছিল সম্পদ।থার্ড থিয়েটার আনল নতুন চিন্তাধারা নাট্যদর্শনে।সবাইকে নয় কিছু মানুষ আসুক দেখুক ভাবুক।জানুক এভাবেও থিয়েটার হয়।দর্শকের সংগে অন্তরঙ্গ হবার প্রয়াস।ঠিক যেন রবীন্দ্রনাথের গানের পঙক্তির মতো " কোনো আয়োজন নাই একেবারে।সুর বাঁধা নাই এ বীণার তারে"
দেখতে দেখতে বাদলবাবু জনপ্রিয় হতে থাকলেন বুদ্ধিজীবী মহলে আর যারা প্রসেনিয়মের হাতির খোরাক জোগাতে অক্ষম তাদের কাছে।এর ফলে একদিকে সারস্বত চর্চা বাড়ল আবার একটা ধোঁয়াশাও তৈরি হতে থাকল।
ঠিক এই জায়গাতেই ঢুকে পড়ল অন্তরঙ্গ বা ইন্টিমেট থিয়েটার।গ্রোটোস্কি, অউগস্ত বোয়াল এসে পেনিট্রেট করছেন।অবণী বিশ্বাস প্রবীর গুহ থিয়েটারের ধারা পাল্টানোয় শিক্ষা শিবির চালাচ্ছে।
(ক্রমশ)
ছোটবেলায় দেশঘরে থিয়েটার দেখেছি, করেছি মাঠে অস্থায়ী স্টেজে।পরে জেনেছিলাম ওকেই বলে প্রসেনিয়ম স্টেজ।নাটক নিয়ে পড়তে এসে বুঝলাম ওটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো।তখন আকাদেমি, রবীন্দ্রসদন, মুক্তাঙ্গন, রঙ্গনা, রঙমহল, মিনার্ভা, বিশ্বরূপা এগুলোই ছিল থিয়েটার করার স্টেজ।এর মধ্যে আকাদেমিই ছিল সবার প্রাণকেন্দ্র।সে বহুরূপীই হোক কি পি এল টি।নান্দীকার হোক কি থিয়েটার ওয়র্কশপ।থিয়েটার কমিউন হোক কি চার্বাক।বাকি অনেকের যাদের নাম নিলাম না তারা কালেভদ্রে সুযোগ পেতেন বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার মতন।অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এর নাটক তখন সকালে হয়।
তখনও বাংলা নাট্যচর্চায় নামে তালপুকুর ঘটি ডোবে না অবস্থা হয়নি পেশাদার থিয়েটারের।জমিদারী যেতে চলেছে এটা বোঝা গেলেও ঠাটবাট বজায় রাখার মরিয়া চেষ্টাটা আছে।তার সংগে অনুপ্রবেশ ঘটল প্রাপ্তবয়স্ক নামের অশ্লীল অনাটক।বারবধূ প্রতাপ মঞ্চে রমরমিয়ে চলছে শুধু "A" লেখার টানে।আমি পরে স্ক্রিপ্টটা পড়েছি মন দিয়ে।কোথাও অশ্লীল ছিল না।
এর মধ্যেই চুপিসাড়ে এসে পড়ল বাদল সরকারের থার্ড থিয়েটার।নাটক দেখতে গিয়ে মারা পড়ল প্রবীর দত্ত কার্জন পার্কে।এসে গেল বামফ্রন্ট।বেঁচে গেল গ্রুপ থিয়েটার।বাংলা নাটক অক্সিজেন নিল বার্টোল্ট ব্রেক্ষ্টে।
এবার বাংলা থিয়েটার একদিকে হাতিবাগানের বাণিজ্যিক থিয়েটার, ক্ষয়িষ্ণু পেশাদার থিয়েটার, গণনাট্য, গ্রুপ থিয়েটার আর অন্য ধারার থার্ড থিয়েটার।
বাদল সরকার এই প্রসেনিয়ম কনসেপ্ট ভাঙলেন তা কিন্তু নয়।চারের দশক থেকেই গণনাট্য পথে নাটক করছে।সামান্য কিছু উপকরণ, বাদ্যযন্ত্র গলায় ঝোলানো।পুলিশ তাড়া করলেই পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে হয়।অভিনয় আর নাট্যবিষয় এই ছিল সম্পদ।থার্ড থিয়েটার আনল নতুন চিন্তাধারা নাট্যদর্শনে।সবাইকে নয় কিছু মানুষ আসুক দেখুক ভাবুক।জানুক এভাবেও থিয়েটার হয়।দর্শকের সংগে অন্তরঙ্গ হবার প্রয়াস।ঠিক যেন রবীন্দ্রনাথের গানের পঙক্তির মতো " কোনো আয়োজন নাই একেবারে।সুর বাঁধা নাই এ বীণার তারে"
দেখতে দেখতে বাদলবাবু জনপ্রিয় হতে থাকলেন বুদ্ধিজীবী মহলে আর যারা প্রসেনিয়মের হাতির খোরাক জোগাতে অক্ষম তাদের কাছে।এর ফলে একদিকে সারস্বত চর্চা বাড়ল আবার একটা ধোঁয়াশাও তৈরি হতে থাকল।
ঠিক এই জায়গাতেই ঢুকে পড়ল অন্তরঙ্গ বা ইন্টিমেট থিয়েটার।গ্রোটোস্কি, অউগস্ত বোয়াল এসে পেনিট্রেট করছেন।অবণী বিশ্বাস প্রবীর গুহ থিয়েটারের ধারা পাল্টানোয় শিক্ষা শিবির চালাচ্ছে।
(ক্রমশ)