MON KHEROR KHATA

MON KHEROR KHATA
Memories

বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০১৬


এ মোহ আবেশ......প্রভু নষ্ট হয়ে যাই!

সলিল সরকার

আকাশে মেঘের নাভি ফাঁক করে কিছু তারা হয়ত এখনও।

জোনাকির ঝোপে ঝাড়ে চোখ টিপে উঁকি মারা স্বভাব গেল না!

ড্রয়ারে চরস আছে,হাতে গাঁজা,ল্যাপ টপে ল্যাংটো ললনা।

বাম হস্তে পুরুষাঙ্গ, দক্ষিণে মাউস টেপে

নারীর স্রাবের মতো প্রবাহিত নীলাভ পর্ণো.........!

কাল “এ কোন আবেশ......?” মন খেরোর খাতায় পোস্ট করার পর মাঝ রাতে এই লেখাটি ফুটে উঠল আমার মেসেজে।ভাবতে থাকলাম যে এটি আমাকে পাঠিয়েছে সে আমার খোলা পৃষ্ঠার সুযোগ নিয়েছে কিন্তু আমাকে পাঠানোর উদ্দেশ্য কী?আমার লেখাকে মান্যতা দেওয়া না কি অবমাননার এ আর এক প্রকাশ?

ভ্লাদিমির তখনও বেঁচে রাশায় জোর তর্ক উঠল সাহিত্যে যৌনতার সীমারেখা থাকবে কি থাকবে না?তর্ক তুলল যৌবন।মহাবিদ্যালয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই আয়োজন করল আলোচনার। ভ্লাদিমির ইলিয়চ লেনিন আমন্ত্রিতউপস্থিতও হলেন।কোনও মীমাংসা হোলো না।

ফ্রান্সে সাহিত্য,চিত্রশিল্প ও চলচ্চিত্রে যৌনতার অবাধ প্রবাহ।দেশটা গোল্লায় যায়নি।গেল যুদ্ধেও নয়। গেল মূদ্রাস্ফীতি আর জঙ্গী আক্রমনে।আমেরিকা পিট সিগার আর পোল রবসনকে গাইতে বাধা দেয়। হ্যারিবেলা ফোন্টে আর জোয়ান বেইজকে চেনে তৃ্তীয় দুনিয়ার মানুষ।চে এর মুখ ওরা বুকে ছেপে দিয়েছে।লুকিয়ে পাঠাচ্ছে অস্ত্র আর গোপনে ভাইরাস।আমাদের ছেলেরা তাই দুপুরে টিটকিরি দেয়,বিকেলে ধর্ষণ।সন্ধ্যায় মদ্যপান,মাঝরাতে আত্মহণন।

গান্ধী ও রায়ের যৌথ উদ্যোগে এই বাংলায় সন্তোষী মা,সাট্টা-জুয়া ও জরুরী অবস্থা প্রবেশ করেছিল। জরুরী ব্যবস্থা উঠে গেল কালের যাত্রার ধ্বনিতে কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় ক্যারাম ক্লাব আর সাট্টা-জুয়া পি এল ফোর এইট্টির সুবাদে আসা পারথেনিয়মের মতো স্থায়ী আসন করে নিল।হিপিদের হ্যাপা সাম্লাতে বেগ পেতে হোলো বাঙালি সমাজকে।কারণ ততদিনে তাদের হাত ধরে আমাদের ছেলেরা পেয়ে গেছে হেরোইন,চরস,ব্রাউন সুগার।সবার আগে চ্যাঁচাল ‘ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স’ কারণ তাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরাই প্রথমে উচ্ছন্নে যাচ্ছিল।বস্তির ছেলে-মেয়ে-বৌরা তখন বেচত।কিনত ধনীর দুলাল-দুলালীরা।কালে কালে ‘নাড়ু বানালে কুটো হাতে আসে’এর মতো তারাও নিতে থাকল এর সোয়াদ।জান্তে থাকল এর মহিমা।খাদ্যাভাসে জ্যান্ত থাকল বস্তির খুব কম ছেলেমেয়েই। হাতিবাগানের পেশাদার মঞ্চে এলো ‘এ” মার্কা পানশে না টক।ক্যাবারে ডান্সের নামে এলো বৃহন্নলা নৃ্ত্য।সবাই কি মিস শেফালি হয়?বিস্বাদ পানশে না টক তত ক্ষতি করতে পারল না যত ক্ষতি করে গেল বিষাক্ত চোলাই,চরস আর ফেন্সিডিল।

বামফ্রন্ট আসায় সাময়িক ভাবে তারা মুখ লুকালো কিছুদিনের জন্যে।পানাপুকুরের পানা উঠিয়ে নিলেও আবার যেমন সে ধীরে ধীরে গ্রাস করে পুকুরকে।মাছগুলো অক্সিজেনের অভাবে খাবি খেতে খেতে মরে, কোলকাতার অবস্থাও হোলো তাই।ধীরে ধীরে ফিরে এলো সব স্ব্মহিমায়।

মনোবিদ ও এ বঙ্গে প্যাভলভকে জনপ্রিয় করেছিলেন যিনি সেই সমাজ চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ গাংগুলি সেই কবে কার্ল মার্কস এর অবহেলিত চিন্তাকে পুনরুদ্ধার করে লিখেছিলেন “বিচ্ছিন্নতার ভবিষ্যত”। তিনি লিখলেন বীর্যক্ষরণে কোনও পাপ নেই।পাপ আছে অকারণ রক্তক্ষরণে।তিনি এই শেষবেলাতেও বারংবার নিষেধ করলেন টেলিভিশনে ক্রাইম আর ভায়োলেন্স দেখানোয়।“কা কস্য পরিবেদনা”

আজ যারা আবেশে আক্রান্ত তারা কারা?তারা তো আমরা!আজ যারা আবেশে ভীত তারা কারা? তারা তো আমরাই!আমরা যারা বস্তিতে বড়ো হয়েছি।আমরা যারা অজ গাঁয়ে কাটিয়েছি।আমরা যারা হাফ গেরস্ত ছিলাম।আমরা যারা বিপ্লবী হয়েও বাবা মা পাছে কষ্ট পান তাই পণ নিয়েছি। আমরা যারা বাবা মায়ের শ্রাদ্ধে বামুন ঠাকুরকে মূল্য ধরে দিয়েছি।আমরা যারা বৌ-ছেলে-মেয়েকে তুষ্ট করতে বাবা-মাকে পুরানো বাড়িতে ফেলে এসে মাসে মাসে মূল্য ধরে শান্তি খুঁজেছি।আমরা যারা গাড়ি-বাড়ি-ব্যাংক ব্যালান্সের পরে ‘এ জীবনে কী করিলাম?’ ভেবে দেবদাস হয়েছি।আমরাই আজ মোহ আবেশে গ্রস্ত হয়েছি।তাই আমরাই স্বেচ্ছা অন্ধ গান্ধারী হয়ে উচ্চারণ করে চলেছি-“কার নিন্দা করো তুমি,মাথা করো নত!এ আমার,এ তোমার পাপ!?

গুরুদেব তোমার এই পচাত্তর প্রয়াণ বৎসরে.........বাই শে শ্রাবণ।

1 টি মন্তব্য:

  1. Samir Mitra Darun maja ....Darun ghora...
    Like · Reply · 4 August at 00:01
    Nirod Majumder
    Nirod Majumder HUMMM....R EKTU SPECIFIC HTE PARTO (HLE VALO LGTO)....GENERALLY ANABADYYA.....
    Like · Reply · 4 August at 00:31
    Kaustuv De
    Kaustuv De ar amader sei shob noshtami...
    Like · Reply · 4 August at 01:46
    Prasenjit Roy
    Prasenjit Roy Asadharan
    Like · Reply · 4 August at 13:08

    উত্তরমুছুন