MON KHEROR KHATA

MON KHEROR KHATA
Memories

বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭

ান্ত ঠিক কী ভুল ছিল সে কথায় পরে আসব।ছুতোরের ছেড়ে আসাটা সময়োচিত ছিল কি না সে কথায় এখন নাই বা গেলাম।চন্দন কোন্ অপরাধে দণ্ডিত।থাকল কারা, কেন আজ সেসব কথা নয়।এখন সেট রেডি হয়ে গেছে।বীরপাড়ার দশ বাই বিশ ফুটের মেঝেতে কাঠের কাঠামো দাঁড় করানো হোলো।আ্যক্টরস্ লেফ্ট এ নীহারবালার রান্নাঘর।রাইটে জানালা মাত্র একবার শুরুতে ব‍্যবহার হয়।ডানদিকের দেওয়াল ঘেঁষে রিঙ্কু, বাসুর পড়ার টেবিল-চেয়ার।আপস্টেজ রাইটে বাইর থেকে ভেতরে আসার বেরুনোর দরজা।ওই দেওয়ালের বামদিকে একটা ঘুপচি অথচ অমোঘ জানালা যা দিয়ে আলো নয় আসে বস্তির কলহ।বঙ্কু পাগলের মুখ ও মুখোস।ডানদিকের দেওয়ালের কুলুঙ্গীটাও খুব কাজের।ঠাকুরের নিত‍্য সেবার গুজিয়া প্রদীপ থেকে সম্বর্ধনা থেকে পাওয়া অমৃতি,সন্দেশ তাও থাকে।থাকে দেশলাই যার দু-একটা কাঠি প্রায়ই ধার করে চন্দ্রকান্ত।তা নিয়ে কিছু বললেই নীহারবালাকে শুনতে হয়-তোমার দিদির যা মুখ ও দেশলাই লাগে না।বিড়ি আপনিই পুড়ে যায়।
বাঁদিকের দেওয়াল ঘেঁষে থাকা চৌকি ভীরু মধ‍্যবিত্ত ত্বিষাম্পতির লেটে যাওয়া নয় লুকানোর জায়গা।আর মাঝখানের চেয়ার নীহারবালা কি চন্দ্রকান্ত এর বসার জায়গা।ত্বিষাম্পতি ওই আরামকেদারার পাশে মাথা উঁচু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনি বলার সময়।লোড ও আপোস ত‍্যাগ করার সময়।চাঁদা চাইতে এসে পাড়ার লুম্পেনরা ছোট মেয়ে রিঙ্কুকে টাচ্ করার সময়-এ তো কুসুমকুঁড়ি!এর গায়ে হাত দিতে আপনার লাগছে?
গা ঘিনঘিন্ করে উঠত দর্শকের।সদ‍্য ফেলে আসা সময়টার দগদগে স্মৃতি। প্রবুদ্ধ আর স্বপন স্বাভাবিক অভিনয় দিয়েই সেটা ফুটিয়ে তুলত।তার মধ‍্যে প্রবুদ্ধ ছিল শ‍্যামবাজারের ছেলে।একটু শ তো ছিলই।গৌরী ওই অল্প বয়সেই করত ঘোষঠাকুমা।শক্তি দার মেক আপ দেখে সত‍্যজিৎ রায় ও নাটক দেখতে এসে চমকে উঠেছিলেন।রিঙ্কু শুরুতে করত টুপুর পরে করত অপর্ণা। মৃণাল‍দা(সেন) এ নাটক দেখে "একদিন প্রতিদিন" এ টুপুরকে নিলেন।উৎপলেন্দু চক্রবর্তী "ময়নাতদন্ত"এ নিয়েছিল অনেককেই।বিশেষ করে চন্দ্রকান্ত চরিত্রের চন্দনকে।অমিতাক্ষর নাটকের চন্দ্রকান্ত এক অদ্ভুত মধ‍্যবিত্ত অপরচুনিস্ট।যে দেশলাই কাঠি নেয় আর অন‍্যের জীবনে কাঠি করে।"সাপের ল‍্যাজে পা দিলে ভায়া!"
যদিও চন্দ্রকান্ত সামান‍্য ছাপোষা মধ‍্যবিত্ত।সে জানত এ সমাজে অর্থই আসল।কিম্ আশ্চর্যম্! বাস্তবে সে নিজেই পা ফসকে পড়ল পাদপীঠের থেকে পাকে বিপাকে!চোপ্ এসব কথা বলার এখনও সময় আসেনি।এখন মহলা চলছে।
(চলবে)
MON KHEROR KHATA(LIFE n ART)
sarkarsalil.blogspot.com
Comments
Prabuddha Mitra প্রথম কথা, শুধু থিয়েটার দল কেন যে কোনো সংগঠনের স্যোশাইটি রেজিষ্ট্রেশনের শর্তই হলো প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, ট্রেসারার ইত্যাদি ইত্যাদি থাকা বাঞ্ছনীয়।কিন্তু থিয়েটার দল বিশেষ করে ঐ সময়ের দলগুলো ভীষণভাবে আন্তর্জাতিক কমিউনিষ্ট পার্টির গঠনতন্ত্র দ্বারা প্রভাবিত ছিলো।স্থানীয় নিয়মে সরকারি নথিভুক্তিকরণ আর কমিউনিষ্ট গঠনতন্ত্র অনুযায়ী 'প্রেসিডিয়াম'- এ দুয়ের মিশ্র পাকে একটু গোলমাল তো থাকবেই। এর ওপর আর একটা লেবেল ছিলো 'অ্যান্টি ডিরেকটরস' থিয়েটার।এতো আঁটোসাটো লোহাকামরার কোন্ ফাঁকটা দিয়ে যে অহং এর বেশে সাপটা ঢুকলো সেই গবেষণায় এখন না যাওয়াই ভালো।কারণ, এতে ত্বিষাম্পতির জীবনকথা হোঁচট খেতে পারে।তার চে বরং এই প্রজন্ম এটা জানুক যে নাটকের কুশীলবেরা তখন কতোটা নিষ্ঠা ও একাগ্রতা দিয়ে নিজের নিজের কাজটা করেছিলো।প্রতিটা কাজই যেহেতু এক একটা ইঁট গাঁথা তাই গোটা সৃষ্টিটাই যৌথ।এই সারকথাটাই আসলে গ্রুপ থিয়েটারের নির্যাস।সেটা ঠিকঠাক হয়েছিলো বলেই ত্বিষাম্পতির জীবন উৎরে গিয়েছিলো। নাটক ও মঞ্চভাবনা একজনের, অভিনয় ভাবনা একজনের, মঞ্চনির্মাণ আর একজনের, শব্দ প্রক্ষেপণে শ্রীপতি দাস, মেক আপে শক্তি সেন,আলোয় ঘোষ দা এবং প্রত্যেক চরিত্রাভিনেতা ও সমস্ত পার্শ্ববন্ধুরা - সকলে মিলে একটা দল, একটা সমবেত সৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হয়েছিলো ত্বিষামের জীবন। যেখানে "ছুতোরে"র ঠুকঠাক আর শ্যামবাজারের 'শ' সবই ছিলো নিখুঁত মাপা ও এককথায় খাপে খাপ। তাই ত্বিষামের জীবন দর্শকদের হাততালি ও গা ঘিনঘিনে সমৃদ্ধ হয়েছিলো।
কথা আরো চলতে থাকুক, চলতে থাকুক...


Reply
2
2 hrsEdited
Manage
Salil Sarkar আলো শ্রীপতিদা(দাস)নয়।ওটা আকাদেমির ঘোষদা হবে।শ্রীপতিদা ছিল ধ্বনি ও শব্দ প্রক্ষেপণে।সে কথায় আসব।
ভাই প্রবুদ্ধ এখন বাংলা নাট‍্যে যে ভরা কোটাল ও ষাঁড়া-ষাঁড়ির বাণ এসেছে যা শান্তিনিকেতনে বসেই শুনতে পাচ্ছি এবং এও পড়ছি 
"যদ‍্যপি আমার গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায়

তদ‍্যপি আমার গুরু নিত‍্যানন্দ রায়!"
আমি সেই নিত‍্যানন্দ রায় গুরুদের পাশে যাদের বেদীতলে তারা উঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের কথা ও কারণ না লিখলে ইতিহাস যে গুমরে কেঁদে মরবে ভাই।
মতামত ও উৎসাহ দেবার জন‍্য ধন‍্যবাদ।


Reply
1
4 hrs
Manage
Prabuddha Mitra ঠিক করে দিলাম ভুলগুলো।
হ্যাঁ, সব কথাই একে একে আসুক।কিন্তু সেদিনকার 'নিত্যানন্দ' দের কান অবধি সবটা পৌঁছচ্ছে কী না জানিনা ভাই।ফে বু তে তেনারা আসক্ত হলে তবেই তো সিদ্ধি।


Reply2 hrs
Manage
Salil Sarkar তাদের কানে পৌঁছনোর দায়িত্ব নিইনি।ইতিহাসের দায়বদ্ধতা আর নাট‍্যগবেষকের দায়িত্ব থেকেই লিখে চলেছি আজীবন।কতটা নিরপেক্ষ বা আদপেই নিরপেক্ষ থাকব কি না সেটা তর্কসাপেক্ষ।

Reply2 hrs
Manage
Shyamali Banerjee বেশ বেশ

Reply14 hrs

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন