ত্বিষাম্পতির জীবন যাপন
সলিল সরকার
৭.
"ভয়!আর কতো ভয় পাবো বলতে পারো?একবার ইচ্ছে করে না সাহস দেখাই?"
যে ছাপোষা মধ্যবিত্ত আশপাশের শব্দেও ভয় পায় সেই এ কথা বলে ওঠে কখন? যখন দেওয়ালে পিঠ ঠ্যাকে।একটি মধ্যবিত্ত চরিত্র লার্জার দ্যান লাইফ হয়ে ওঠে।একটি নাটক সার্থক কখন?যখন সে সময়ের দাবি মিটিয়ে পরেও সত্যকে প্রতিভাত করে।জরুরি অবস্থায় ও পরে স্রষ্টা যেভাবে শিল্প সৃষ্টি করে পরে স্রষ্টা সরলেও সৃষ্টির অবস্থান সরে না।সে মাথা উঁচু করে বলে"একটা একটা পাথর সরালেও পাহাড় একদিন মাঠ হয়!" বোকা বুড়োর এই গপ্পোটা মুখে মুখে ফিরত।বোকা বুড়োরাই এই কাজটি আজও করতে পারে যদি সস্তা প্রলোভনে নিজেকে বিকিয়ে না দিয়ে থাকে ইতোমধ্যে।বঙ্কু পাগল এসব জানত না।বলতে কি কে করবে ওই সংলাপহীন পাগলের চরিত্র সেটাই ঠিক ছিল না।অথচ বঙ্কু কাকতাড়ুয়ার ভাঙা কালো হাঁড়িটা নিয়ে বিরতির আগে এসে জানালায় দাঁড়াবে সেটা একটা নতুন হাঁড়ি কিনি ভুসো কালি মাখানো হোলো।মুখ আঁকা হোলো তারপর স্থানে স্থানে ভাঙা হোলো।কাউকে না পেয়ে দ্বিজেনদা একেবারে শেষবেলায় দাঁড় করিয়ে দিল ছুতোর মিস্ত্রিকে।সেটের কাজ ততদিনে শেষ।এবার সাউন্ডের কাজ হবে।
বাংলা থিয়েটারে তখনও মিউজিক কম্পোজ করার ব্যাপারটা প্রায় অবিশ্বাস্য ও ভাবনার বাইরেও।অঙ্গার এ রবিশঙ্করের কাজ, রক্তকরবীর খালেদদার ব্যাঞ্জোর ব্যানতারা ব্যতিক্রম।তাই সবার ভরসা শ্রীপতি দাস। মানুষটি মানুষ হয়েছিল স্বয়ং উৎপল দত্তের হাতে।সত্যজিৎ রায় বলতেন শ্রীপতির হাতে টেপরেকর্ডার সেতারের মতো বাজে।নানান নাটকের নানান পিস্ আর কিছু শব্দ তৈরি করতে বসা হোলো এক সন্ধ্যায় বীরপাড়ার ঘরেই।লেনিন সরণি চষে কিনলাম আমি আর প্রবুদ্ধ হিন্দি গানের রেকর্ড আর চকোলেট বোমা,কালিপটকা।নাটকের শুরুর বিসর্জনের আবহ তৈরিতে।যেখানে রিঙ্কু ভাসানের শব্দবাজিউল্লাসালোক দেখে উত্তেজিত আর তার মা রান্নাঘরে ফিরে যেতে যেতে বলবে
নীহারবালা-বাব্বা কতো খরচ করেছে!
ত্বিষাম্পতি-খরচ?হুঁঃ
আহা ২০১০ এর পরের প্রযোজনা হলে ডিজে আর ডলবি ডিজিটালে জবরদস্ত হোতো।হলে সিটি পড়ত।আকাদেমির পর্দার ফাঁক দিয়ে দেখতাম সেই উল্লাস যা সেসময় কঠোরভাবে নিষেধ ছিল।
শ্রীপতিদার স্টকের মতোই ছিল নাটকের নানান টক।শুনতে শুনতে পূর্বসূরিদের ইতিহাস জানা হয়ে যেত।আর শক্তিদার দুটো হাত ছিল জাদুমাখানো।সংগে থাকত মানিকবাবুর কাজের ইতিহাস।হাঁ করে গিলতাম সেসব কথা।এসব সেকেলে ধারা।আজ যারা থিয়েটারে আসেন কতো জানেন তারা তাই ইতিহাসের ধার ধারেন না।বিপ্লব স্পন্দিত বুকে স্বঘোষিত তারাই থ্যাটার।
বিপ্লবের কথাই যখন এলো কথা হোক সেই বৈপ্লবিক ক্ষণের।
এলো ১৯৭৮ এর ২মে।
সলিল সরকার
৭.
"ভয়!আর কতো ভয় পাবো বলতে পারো?একবার ইচ্ছে করে না সাহস দেখাই?"
যে ছাপোষা মধ্যবিত্ত আশপাশের শব্দেও ভয় পায় সেই এ কথা বলে ওঠে কখন? যখন দেওয়ালে পিঠ ঠ্যাকে।একটি মধ্যবিত্ত চরিত্র লার্জার দ্যান লাইফ হয়ে ওঠে।একটি নাটক সার্থক কখন?যখন সে সময়ের দাবি মিটিয়ে পরেও সত্যকে প্রতিভাত করে।জরুরি অবস্থায় ও পরে স্রষ্টা যেভাবে শিল্প সৃষ্টি করে পরে স্রষ্টা সরলেও সৃষ্টির অবস্থান সরে না।সে মাথা উঁচু করে বলে"একটা একটা পাথর সরালেও পাহাড় একদিন মাঠ হয়!" বোকা বুড়োর এই গপ্পোটা মুখে মুখে ফিরত।বোকা বুড়োরাই এই কাজটি আজও করতে পারে যদি সস্তা প্রলোভনে নিজেকে বিকিয়ে না দিয়ে থাকে ইতোমধ্যে।বঙ্কু পাগল এসব জানত না।বলতে কি কে করবে ওই সংলাপহীন পাগলের চরিত্র সেটাই ঠিক ছিল না।অথচ বঙ্কু কাকতাড়ুয়ার ভাঙা কালো হাঁড়িটা নিয়ে বিরতির আগে এসে জানালায় দাঁড়াবে সেটা একটা নতুন হাঁড়ি কিনি ভুসো কালি মাখানো হোলো।মুখ আঁকা হোলো তারপর স্থানে স্থানে ভাঙা হোলো।কাউকে না পেয়ে দ্বিজেনদা একেবারে শেষবেলায় দাঁড় করিয়ে দিল ছুতোর মিস্ত্রিকে।সেটের কাজ ততদিনে শেষ।এবার সাউন্ডের কাজ হবে।
বাংলা থিয়েটারে তখনও মিউজিক কম্পোজ করার ব্যাপারটা প্রায় অবিশ্বাস্য ও ভাবনার বাইরেও।অঙ্গার এ রবিশঙ্করের কাজ, রক্তকরবীর খালেদদার ব্যাঞ্জোর ব্যানতারা ব্যতিক্রম।তাই সবার ভরসা শ্রীপতি দাস। মানুষটি মানুষ হয়েছিল স্বয়ং উৎপল দত্তের হাতে।সত্যজিৎ রায় বলতেন শ্রীপতির হাতে টেপরেকর্ডার সেতারের মতো বাজে।নানান নাটকের নানান পিস্ আর কিছু শব্দ তৈরি করতে বসা হোলো এক সন্ধ্যায় বীরপাড়ার ঘরেই।লেনিন সরণি চষে কিনলাম আমি আর প্রবুদ্ধ হিন্দি গানের রেকর্ড আর চকোলেট বোমা,কালিপটকা।নাটকের শুরুর বিসর্জনের আবহ তৈরিতে।যেখানে রিঙ্কু ভাসানের শব্দবাজিউল্লাসালোক দেখে উত্তেজিত আর তার মা রান্নাঘরে ফিরে যেতে যেতে বলবে
নীহারবালা-বাব্বা কতো খরচ করেছে!
ত্বিষাম্পতি-খরচ?হুঁঃ
আহা ২০১০ এর পরের প্রযোজনা হলে ডিজে আর ডলবি ডিজিটালে জবরদস্ত হোতো।হলে সিটি পড়ত।আকাদেমির পর্দার ফাঁক দিয়ে দেখতাম সেই উল্লাস যা সেসময় কঠোরভাবে নিষেধ ছিল।
শ্রীপতিদার স্টকের মতোই ছিল নাটকের নানান টক।শুনতে শুনতে পূর্বসূরিদের ইতিহাস জানা হয়ে যেত।আর শক্তিদার দুটো হাত ছিল জাদুমাখানো।সংগে থাকত মানিকবাবুর কাজের ইতিহাস।হাঁ করে গিলতাম সেসব কথা।এসব সেকেলে ধারা।আজ যারা থিয়েটারে আসেন কতো জানেন তারা তাই ইতিহাসের ধার ধারেন না।বিপ্লব স্পন্দিত বুকে স্বঘোষিত তারাই থ্যাটার।
বিপ্লবের কথাই যখন এলো কথা হোক সেই বৈপ্লবিক ক্ষণের।
এলো ১৯৭৮ এর ২মে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন