ত্বিষাম্পতির জীবন যাপন
সলিল সরকার
৪.
আজ অক্টোবর নয়।কাল ছিল আট অভিনেতা পরিচালক দ্বিজেনদার শোকসভা।আর আজ একটি দলের জন্মদিন যা ঘটেছিল সাতাত্তরে।একদল তরতাজা নাট্যযোদ্ধার কিছু না হারিয়ে "পাওয়ার" লড়াই।পেল।অমিত অক্ষরে।সেদিনই কী হারাবার বীজটা পোঁতা হয়ে গিয়েছিল?সে কথায় আসব পরে।আপাতত ফিরে যাই গনগনে উত্তাপ ও রোদের দিনে।
আগেই লিখেছি ভিকিরিপতি গ্রাম থেকে মোকাম কলিকাতায় করাত,র্যাঁদা, বাটালি, হাতুড়ি নিয়ে যে এসেছিল সে ছিল এই যুবক যুবতীদের চেয়ে অনেক কম প্রতিভার কিন্তু পরিশ্রমী।পাক(পাইক)পাড়ায় মাসির বাড়ি মাথা গুঁজে বীরপাড়ায় রোজ সকালে এসে গ্যারাজ ঘরে বসে যেত সেট বানাতে একা একা।সাহায্য করার কেউ নেই।থাকার কথাও নয়।তারা সবাই কলকাতার বুদ্ধিজীবী কেউ কেউ কেরানি।শুধু রোজ দুপুরে এক যুবক বাগবাজার থেকে বীরপাড়া আসত ওই গেঁয়ো ছেলের রুটিতড়কাআচার নিয়ে। তার হাতে থাকত জাঁ জেনের "ব্ল্যাক" কিম্বা মার্টিন এসলিন।খাওয়া সেরে গেঁয়ো ফিরে যেত গারাজে।যুবক চলে যেত কাজে।সেই যুবক পরে বন্ধু হয়েছিল।বস্তুত প্রবুদ্ধ মিত্র,গৌরী চৌধুরী, গৌতম চৌধুরী আর আমি সেই থেকে আজও অকৃত্রিম বন্ধু।এই দলটির সংগে আগের সবার সংযোগ স্থাপন করতেন দেবাশিস মজুমদার। বলতে কী দেবাশিস এর বন্ধু ভাগ্য ছিল(!)চমৎকার।চন্দন আর অমিত ছায়ার মতো লেগে থাকত হাঁপানির টান থেকে খুঁটিনাটি দ্রব্যে।আর একজনের কথা না বললেই নয়।এমন নীরব সহৃদয় সুহৃদ খুব কম মানুষের জোটে।নাম দীপক রায়।যার দাদা কার্টুনিস্ট সুফী।কোনও বিরল তথ্য চাই দীপক।কোনও দুর্লভ গ্রন্থ চাই দীপক। বন্ধুকে কর্মজীবনে সাহায্য সেও দীপক।দীপক রায় ছিলেন লাইব্রেরিয়ান।প্রথমে বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল সেখান থেকে শ্যামবাজার সেখান থেকে বাগবাজার রিডিং লাইব্রেরি সেখান থেকে কলেজ স্ট্রিট ইভিনিং সিটি থেকে অবসর।দীপক রায় আজও জীবিত ও আমার পরম সুহৃদ, আত্মীয় নয়।
দ্বিজেনদা ছিল মুখচোরা লাজুক অথচ ফুর্তি বাজ।চেনা পরিসরে তার জুড়ি মেলা ভার।কিঞ্চিত বিলাসী কিন্তু নাটকের কাজে অসম্ভব পরিশ্রমী।ওই গ্রীষ্মের তাপে পাখা বন্ধ করে জল পান না করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাটকের রিহার্সাল যার মধ্যে ত্বিষাম্পতির গায়ে জড়ানো একটা শীতের চাদর।প্রশ্ন জাগবে জানলে কী করে?থাকতে তো গ্যারাজ ঘরে! বিকেলে আর ছুটির দিনের দুপুরের রিহার্সালে বিশিষ্ট কেউ এলে ছুতোর মিস্ত্রির ডাক পড়ত পরিচিত হতে।এই সৌজন্যবোধ তাদের ছিল।একেবারে শেষ দিকে এসে সেটের কাপড় রঙ করতে এক ছুটির দিন সবাই হাত লাগালেন।সে এক ধুন্দুমার কাণ্ড!কাজ হোলো দ্বিজেনদার বাড়ির ছাদে।সেদিন সবাই কিন্তু এক খাওয়া একসাথেই।
দ্বিজেনদার কথা বলতে গিয়ে খাওয়ার কথা না বললে সে কিস্সা বৃথা বাক্যব্যয়।সন্ধ্যায় রিহার্সালে নিজেদের হাতে তৈরি চা আর মুড়ি বাদাম ছোলা চানাচুর ও ইসপেসাল দশ পয়সার সিঙাড়া।বিশ্বাস করুন আশিতেও ওই বাড়ি ছেড়ে আসা অব্দি পাওয়া যেত।মেঝেতে কাগজ পেতে তার উপরে মুড়ি ঢেলে সেই পিরামিডের উপর চপ,চানাচুর, সিঙাড়া। দ্বিজেনদার আইডিয়া অবশ্য ভিন্ন ছিল।মুড়িতে ওসব মাখা নয় বরং উচিত অনুষঙ্গে সামান্য মুড়ি সংযোগ।
সলিল সরকার
৪.
আজ অক্টোবর নয়।কাল ছিল আট অভিনেতা পরিচালক দ্বিজেনদার শোকসভা।আর আজ একটি দলের জন্মদিন যা ঘটেছিল সাতাত্তরে।একদল তরতাজা নাট্যযোদ্ধার কিছু না হারিয়ে "পাওয়ার" লড়াই।পেল।অমিত অক্ষরে।সেদিনই কী হারাবার বীজটা পোঁতা হয়ে গিয়েছিল?সে কথায় আসব পরে।আপাতত ফিরে যাই গনগনে উত্তাপ ও রোদের দিনে।
আগেই লিখেছি ভিকিরিপতি গ্রাম থেকে মোকাম কলিকাতায় করাত,র্যাঁদা, বাটালি, হাতুড়ি নিয়ে যে এসেছিল সে ছিল এই যুবক যুবতীদের চেয়ে অনেক কম প্রতিভার কিন্তু পরিশ্রমী।পাক(পাইক)পাড়ায় মাসির বাড়ি মাথা গুঁজে বীরপাড়ায় রোজ সকালে এসে গ্যারাজ ঘরে বসে যেত সেট বানাতে একা একা।সাহায্য করার কেউ নেই।থাকার কথাও নয়।তারা সবাই কলকাতার বুদ্ধিজীবী কেউ কেউ কেরানি।শুধু রোজ দুপুরে এক যুবক বাগবাজার থেকে বীরপাড়া আসত ওই গেঁয়ো ছেলের রুটিতড়কাআচার নিয়ে। তার হাতে থাকত জাঁ জেনের "ব্ল্যাক" কিম্বা মার্টিন এসলিন।খাওয়া সেরে গেঁয়ো ফিরে যেত গারাজে।যুবক চলে যেত কাজে।সেই যুবক পরে বন্ধু হয়েছিল।বস্তুত প্রবুদ্ধ মিত্র,গৌরী চৌধুরী, গৌতম চৌধুরী আর আমি সেই থেকে আজও অকৃত্রিম বন্ধু।এই দলটির সংগে আগের সবার সংযোগ স্থাপন করতেন দেবাশিস মজুমদার। বলতে কী দেবাশিস এর বন্ধু ভাগ্য ছিল(!)চমৎকার।চন্দন আর অমিত ছায়ার মতো লেগে থাকত হাঁপানির টান থেকে খুঁটিনাটি দ্রব্যে।আর একজনের কথা না বললেই নয়।এমন নীরব সহৃদয় সুহৃদ খুব কম মানুষের জোটে।নাম দীপক রায়।যার দাদা কার্টুনিস্ট সুফী।কোনও বিরল তথ্য চাই দীপক।কোনও দুর্লভ গ্রন্থ চাই দীপক। বন্ধুকে কর্মজীবনে সাহায্য সেও দীপক।দীপক রায় ছিলেন লাইব্রেরিয়ান।প্রথমে বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল সেখান থেকে শ্যামবাজার সেখান থেকে বাগবাজার রিডিং লাইব্রেরি সেখান থেকে কলেজ স্ট্রিট ইভিনিং সিটি থেকে অবসর।দীপক রায় আজও জীবিত ও আমার পরম সুহৃদ, আত্মীয় নয়।
দ্বিজেনদা ছিল মুখচোরা লাজুক অথচ ফুর্তি বাজ।চেনা পরিসরে তার জুড়ি মেলা ভার।কিঞ্চিত বিলাসী কিন্তু নাটকের কাজে অসম্ভব পরিশ্রমী।ওই গ্রীষ্মের তাপে পাখা বন্ধ করে জল পান না করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাটকের রিহার্সাল যার মধ্যে ত্বিষাম্পতির গায়ে জড়ানো একটা শীতের চাদর।প্রশ্ন জাগবে জানলে কী করে?থাকতে তো গ্যারাজ ঘরে! বিকেলে আর ছুটির দিনের দুপুরের রিহার্সালে বিশিষ্ট কেউ এলে ছুতোর মিস্ত্রির ডাক পড়ত পরিচিত হতে।এই সৌজন্যবোধ তাদের ছিল।একেবারে শেষ দিকে এসে সেটের কাপড় রঙ করতে এক ছুটির দিন সবাই হাত লাগালেন।সে এক ধুন্দুমার কাণ্ড!কাজ হোলো দ্বিজেনদার বাড়ির ছাদে।সেদিন সবাই কিন্তু এক খাওয়া একসাথেই।
দ্বিজেনদার কথা বলতে গিয়ে খাওয়ার কথা না বললে সে কিস্সা বৃথা বাক্যব্যয়।সন্ধ্যায় রিহার্সালে নিজেদের হাতে তৈরি চা আর মুড়ি বাদাম ছোলা চানাচুর ও ইসপেসাল দশ পয়সার সিঙাড়া।বিশ্বাস করুন আশিতেও ওই বাড়ি ছেড়ে আসা অব্দি পাওয়া যেত।মেঝেতে কাগজ পেতে তার উপরে মুড়ি ঢেলে সেই পিরামিডের উপর চপ,চানাচুর, সিঙাড়া। দ্বিজেনদার আইডিয়া অবশ্য ভিন্ন ছিল।মুড়িতে ওসব মাখা নয় বরং উচিত অনুষঙ্গে সামান্য মুড়ি সংযোগ।
Shyamali Banerjee বড় ভাল লাগছে সেই পুরোনো দিনে ফিরে যাচ্ছি যদিও আমি কেউ ছিলাম না। তাও,,,,,,,,,
উত্তরমুছুনLike · Reply · 11 October at 14:23
Manage
Salil Sarkar
Salil Sarkar কে বলে কেউ ছিলি না?এই বিষয়টি ও লেখাতে আসবে।কতো মানুষ আড়ালে থেকেও ত্বিষাম্পতির পরিবারের সদস্য।
Like · Reply · 11 October at 15:06
Manage
Ambar Champati
Ambar Champati খুব ভালো লাগছে সলিলদা।
Like · Reply · 9 October at 16:32
Manage
Salil Sarkar
Salil Sarkar কিছু অভিজ্ঞতা থাকলে এখানে শেয়ার করলে ভালো লাগবে।
Like · Reply · 9 October at 16:37
Manage
Prabuddha Mitra
Prabuddha Mitra ত্বিষাম্পতির সিগারেট ব্র্যান্ড আর আমার ব্র্যান্ড একই ছিলো। ফলে মাগ্যি গন্ডার বাজারে থিয়েটার করতে আসা তরুণরা একদিকে যেমন উণ্মাদনায় থাকতো অন্যদিকে পকেটের টানাপোড়েনকে সব সময় মাথায় রাখতো।পেটুক ত্বিষাম্পতি সিগারেটের জন্য মাঝে মাঝেই আমার স্মরণাপন্ন হতো।আমি সাড়া দিতাম। আমিও কখনো কখনো হাত পাততাম।ত্বিষাম সাড়া দিত।একটা সারাদিনের মহলায় কমিউন যাপন অপরিহার্য ছিলো।সবটাই হতো থিয়েটারের স্বার্থে।
Like · Reply · 3 · 9 October at 16:05
Manage
Ramita Sengupta
Ramita Sengupta সুদূর আশি সাল । কলিঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রের উদ্যোগে প্রেসিডেন্সি কলেজে সার্ত্রের Wall এর বঙ্গীকরণে " দেওয়াল " পথনাটিকা । সামনের চেয়ারে একটি চুপচাপ মানুষ , শুনলাম তিনিই নাটকের গুণাগুণ বিচারের জন্য আহ্বায়িত । তিনি ----- ! সেই প্রথম তাঁর নাম শোনা, এবং দেখা । তারপর নাটক দেখতে দেখতে সত্তরের কলকাতার দীর্ঘশ্বাস - লাগা দেওয়ালে তলিয়ে কখন তাঁর উপস্থিতি ভুলে গেছি ! কখন নাটক শেষ হয়েছে , তিনি বিচারকের ভূমিকা পালন করতে কোন পুরস্কারে কোন প্রতিভাকে সম্মানিত করে কি বলেছিলেন / করেছিলেন ----- সে গল্প আজ ব্যক্তিগত ইতিহাস । কারণ সেদিনের সেই পুরস্কারদাতা এবং তাঁর কাছে পুরস্কৃত সেদিনের সেই অখ্যাত প্রতিষ্টা দুজনের উপরেই যবনিকা নেমে গেছে পুরো নাটকটা শেষ না হতেই !
Like · Reply · 1 · 10 October at 22:42
Manage
Ramita Sengupta
Ramita Sengupta কোনো কথা হবেনা ! চুপ! অতীত- বর্তমান মিশে গেছে : স্বপ্নের রিল চলছে স্পর্শাতীতকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে !
Like · Reply · 1 · 10 October at 20:50
Manage
Sarbari Chakraborty
Sarbari Chakraborty Bhari sundar . Jeno dekhte pelam
Like · Reply · 1 · 9 October at 14:21
Manage
Neelava Chattopadhyay
Neelava Chattopadhyay Vaggis tomake khunciyechilam tai abar lekha suru korle...
Like · Reply · 1 · 9 October at 20:18
Manage
Partha Sarathi Chandra
Partha Sarathi Chandra ভালো লাগছে সলিল দা, অনেক অজানা ঘটনা জানতে পারছি।
Like · Reply · 1 · 9 October at 19:10
Manage
Shyamali Banerjee
Shyamali Banerjee আমাকে যে এতখানি ভেবে ছো আমি তাই ধন্য
Like · Reply · 1 · 11 October at 15:09
Manage
Subhendu Banerjee
Subhendu Banerjee খুব ভাল লাগছে।
Like · Reply · 1 · 9 October at 14:55
Manage
Anup Mukherjee
Anup Mukherjee খুব ভাল ..
Like · Reply · 11 October at 20:40
Manage
Tapabrata Chatterjee
Tapabrata Chatterjee Bes valo dada
Like · Reply · 10 October at 22:58